আইসবার্গ A-76
বিশ্বের বৃহত্তম হিমবাহে ভাঙন
প্রকৃতি যেন বারবার মানবজাতিকে বার্তা দিচ্ছে উন্নত মানবসমাজ গড়তে গিয়ে প্রকৃতির প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে৷ এরফলে প্রকৃত ক্রোধে ফেটে পড়ছে৷ তাই সাইক্লোন, বন্যা, মহামারি ইত্যাদির সৃষ্টি হচ্ছে৷
বিশ্বকে যখন কোভিড-১৯ এ পুরোপুরি ভাবে গ্রাস করে নিয়েছে মানুষ আতঙ্কিত, চারিদিকে শুধু মৃত্যুর মিছিল বেরছে এই সময় অ্যান্টার্কটিকায় জমে থাকা বরফের পাহাড়ে ধস্ নিয়েছে৷ এই ধসের প্রধান কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming)৷
এই বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সেমিনার করছেন যাতে পরিবেশের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে৷ যেমন মানুষের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হয় না হলে শরীরের অবনতি ঘটে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয় ঠিক পরিবেশের ক্ষেত্রেও এই রকম হয়৷ বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনোক্সাইড, মিথেন প্রভৃতি গ্রিন হাউস (Green House) গ্যাস বাড়তে থাকে ফলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে৷এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য মেরু অঞ্চলে বরফ গলতে শুরু করছে তার ফলে সমুদ্রের জলস্তর ধীরে ধীরে বাড়ছে৷
অ্যান্টার্কটিকায় পৃথিবীর বৃহত্তম হিমবাহ থেকে বরফ গলে এক টুকরো বরফ খন্ড আলাদা হয়ে গেছে৷ এই টুকরো বরফ আয়তন প্রায় 4320 বর্গ কিলোমিটার যা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার আয়তনের সমান এবং দিল্লির আয়তনের প্রায় তিন গুন৷ এই বিশাল আকারের বরফের টুকরোকে আইসবার্গ (Iceberg) বা হিমশৈল বলে৷ বিজ্ঞানীরা হিমশৈলের নাম দিয়েছেন "A-76"৷ যা এখন অ্যান্টার্কটিকার ওয়েডডেল সাগরে ভাসছে৷
কোপার্নিকাস সেন্টিনেল-১ উপগ্রহ চিত্র থেকে এই ভাঙনের চিত্র পাওয়া যায়৷ ইউ এস ন্যাশনাল আইস্ সেন্টার (U.S. National Ice Center) একমাত্র সংস্থা যা অ্যান্টার্কটিকার আইস বার্গের নাম নির্ধারণ করেন৷ এটি আয়তনের দিক দিয়ে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম আইস্ বার্গ৷ হিমশৈল হল সমুদ্রে ভাসমান বিশাল আকৃতি বরফের টুকরো৷ হিমশৈল গুলি শুধুমাত্র ১/৯ অংশ জলে উপরে থেকে বাকি অংশ জলের নিচে৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিমবাহের এই ভাঙন দেখা গিয়েছে৷
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রতি নিয়ত জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে যদিও বর্তমানে এর প্রভাব সামান্য কিন্তু ভবিষ্যতে এর প্রভাব ভয়ঙ্কর হতে পারে৷ এই ভাবে প্রতিনিয়ত জলস্তর বৃদ্ধি পেতে থাকলে সামুদ্রিক দ্বীপ ও উপকূলীয় অঞ্চল গুলি তলিয়ে যাবে সমুদ্রের গভীরে৷ এছাড়াও পানীয় জলের সংঙ্কট সৃষ্টি হবে, চারিদিকে জল থইথই করবে তবুও মানুষ পানীয় জল পাবে না৷
রোগের প্রকোপ বাড়বে, ফসলের ক্ষতি হবে, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, দেখা দেবে, বিশ্ব জুড়ে খাদ্যের সংকট দেখা যাবে, বন্যজন্তুর সংখ্যা হ্রাস পাবে, বিশ্বের আবহাওয়া দূত পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে৷ গ্রীন হাউস গ্যাস এর পরিমাণ বাড়বে ফলে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে৷ এই ভাবে হিমবাহ ভাঙনের কারণে পৃথিবীর কিছু দেশের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠেছে মালদ্বীপ, বাংলাদেশ, ভারত(পশ্চিমবঙ্গ) সমুদ্রের তলায় তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে৷
কোন মন্তব্য নেই