মা (Maa)
মমতাময়ী, জন্মদাত্রী - মা
এই ত্রিভূবনে "মা"(Maa) তোমায় ছাড়া সবই লাগে শূন্য ৷ এই জগৎএ একমাত্র প্রাণ দায়ী তুমি "মা"৷ মৃত্যুর অনেক পথ আছে কিন্তু এই জগৎ সংসারে তুমি ছাড়া প্রাণ সঞ্চার হয় না "মা"৷এই কঠিন বাস্তবতার মাঝে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস মা তোমার কাছে ৷ হাসি-কান্না, দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ উল্লাস, দেশ-বিদেশ যে যেখানে থাকি বা যাই করিনা কেন সব শেষ তোমার ওই মা ডাক দিয়ে মনের শান্তি পাই ৷ "মা" এই শব্দের মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর প্রেম, অসীম স্নেহ, মায়া, নিঃস্বার্থ ভালবাসা ৷ এই নিঃস্বার্থ পৃথিবীতে ঈশ্বর হয়তো সব জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন না৷ সেই জন্য মমতাময়ী, জন্মদাত্রী মা-র সৃষ্টি করেছেন ৷
আমাদের প্রথম শিক্ষা গুরু "মা" ৷ মা এর কাছে আমাদের প্রথম শিক্ষা শুরু হয় ৷ মা এর স্পর্শে সন্তান ধীরে ধীরে পূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠে ৷ প্রথম দিন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সন্তানদের প্রতি মা এর ভালবাসার কোন পরিবর্তন হয় না ৷ পৃথিবীর সব থেকে শান্তির জায়গায় "মাগো তোমার ওই কোল" ৷ তোমার ওই কোলে বিলীন হয়ে যায় সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, খুঁজে পাই নতুন পথের দিশা ৷ সন্তানদের কাছে "মা" তার প্রথম প্রেম ৷
"মা" যেমন তার পুত্রকে নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করে
তেমনি সকল প্রানীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রীভাব পোষন করে ||
- গৌতম বুদ্ধ
মায়েরা খুব বোকা হয়, সে তার নিজের কথা না ভেবে সন্তান ও পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখে সব সময়৷ মায়ের যখন শরীর খারাপ হয় বিছানা ছেড়ে উঠতে পারে না তখনও বলে আমি ঠিক আছি আমার কিছু হয়নি ৷ কিন্তু তার সন্তানদের সামান্য জ্বর হলে এতটাই ভয় পায় যে এক মুহূর্তের জন্য তাদের সামনে থেকে সরে না৷ যতখন না তার ছেলে-মেয়েরা সুস্থ হয়ে ওঠে ৷ তেমনই এক "মা" অক্টোপাস, এরা সামুদ্রিক প্রাণী হলেও মা অক্টোপাস তার স্নেহ, মায়া-মমতা তার বাচ্চাদের জন্য উৎসর্গ করে দেয় ৷ একটি স্ত্রী অক্টোপাস প্রায় দেড় লক্ষ ডিম পাড়ে ৷ ডিম ফুটে বাচ্চা হতে প্রায় ২ থেকে ১০ মাস সময় লাগে ৷ যতদিন না ডিম ফুটে বাচ্চা হয় মা-অক্টোপাস তার ডিম সব সময় পাহারা দেয় ৷ ডিম পাহারা দেবার জন্য মা-অক্টোপাস তার খাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় ৷
এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের দেওয়া শেষ্ঠ উপহার "মা" ৷ তুমি না থাকলে শুরু কি হত এই পথ চলা ? তুমি না থাকলে কি দেখা হত ভোরের তীব্র ওই অগ্নিশিখা, সন্ধ্যার গোধুলি বেলা, রাতের রুপোলি জোৎস্না, তারাদের আনাগোনা কিছুই দেখা হত না ৷ মাগো এই জগৎ তোমারই দেখানো, তোমারই চোখ দিয়ে প্রথম দেখতে শিখেছি এই পৃথিবীর অপরুপ সৌন্দর্য ৷ ছেলেদের কাছে তার মা-ই হল প্রথম প্রেমিকা, মা-ই শেখায় দায়িত্ববোধ, সংবেদনশীলতা, নিষ্ঠা, ভক্তি ইত্যাদি ৷ মাগো তোমার সামনে দাঁড়িয়ে কোন দিন বলতে পারিনি " মা তোমায় ভালোবাসি" ৷
"মা মা মমতাময়ী, তৃষ্ণার্থ পথিকের জল মা,
ভালোবাসা নদী মা, ব্যাথার ঔষধ মা,
কষ্টের মাঝে সুখ ও দুঃখের মাঝে হাসি মা,
চাঁদের ঝিলিক ও স্বর্গের মালিক মা" ৷
তবুও আমার দিয় না মাকে একটু সময় ৷ মা তার সন্তানদের থেকে টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি, ভোগ-বিলাস কিছুই চায় না ৷ চায় শুধু একটু সময় ও ভালোবাসা, শুধু ভালোবাসা ৷
মা আত্মত্যাগী হয় ৷ সে সন্তানদের হাজার ভুল সত্ত্বেও ক্ষমা করে দিতে পারে, যেটা ভগবান ও পারেন না ৷ মা সন্তানদের ভালোবাসা দিয়ে যায় সারা জীবন ধরে ৷ সে কোন দিন হিসাব করে না যে সন্তানদের কাছ থেকে কি পেল আর কি পেলেন না ৷ সে শুধু সন্তানদের হাসি মুখ দেখতে চায় ৷ সন্তানদের কোন বিপদ আসলে মা-ই পারেন তার জীবনের বাজি ধরতে ৷ এমনই এক আত্মত্যাগী মা "সিলাইস" (সামুদ্রিক উকুন) এরা একসঙ্গে অনেক ডিম দেয়৷ তাদের পেটের ভেতরেই কয়েক ধাপে বাচ্চা ফোটে ৷ এই বাচ্চা গুলো মায়ের শরীরের মাংস খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করে ৷ সন্তানদের মুখ চেয়ে মা নিরবে হজম করে সেই নরক্ যন্ত্রণা ৷ এক সময় পুরো দেহ খাওয়া হয়ে গেল তার বাচ্চারা বাইরে আসে ৷ সেই সমুদ্রের বুকে তলিয়ে যায় মা-সিলাইস অস্তিত্ব ৷ মা তো মা হয় মায়ের বিকল্প কিছুই নেই এই দুনিয়ায় ৷
আজ আমার অস্তিত্ব শুধু তোমারই জন্য "প্রিয় মা"
"আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা হলেন মা ৷
মায়ের কাছে আমি চিরঋনী ৷ আমার জীবনের
সমস্ত অর্জন তারই কাছ থেকে পাওয়া নৈতিকতা,
বুদ্ধিমত্তা আর শারীরিক শিক্ষার ফল" ৷
-জর্জ ওয়াশিংটন ৷
মা মানে দায়িত্ব না, কর্তব্য না শুধু এক বুক ভরা ভালোবাসা ৷

কোন মন্তব্য নেই